বিদাত কি?
বিদ‘আত কাকে বলে এ বিষয়ে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। অনেকের ধারণা যা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে ছিলনা তা-ই বিদ‘আত। আবার অনেকে মনে করেন বর্তমান নিয়মতান্ত্রিক মাদ্রাসা শিক্ষা পদ্ধতি একটি বিদ‘আত, মসজিদে কাতার করে নামায পড়া বিদাত, বিমানে হজ্জে যাওয়া বিদ‘আত, মাইকে আজান দেয়া বিদ‘আত ইত্যাদি। এ সকল দিক বিবেচনা করে তারা বিদ‘আতকে নিজেদের খেয়াল খুশি মত দুই ভাগ করে কোনটাকে হাসানাহ (ভাল বিদ‘আত) আবার কোনটাকে সাইয়্যেআহ (মন্দ বিদ‘আত) বলে চালিয়ে দেন। আসলে বিদ‘আত সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে এ বিভ্রান্তি।
বিদ‘আতের আভিধানিক অর্থ হল:
الشيء المخترع على غير مثال سابق ومنه قوله تعالى (قل ما كنت بدعا من الرسل) وجاء على هذا المعنى قول عمر رضيالله عنه (نعمت البدعة )অর্থ: পূর্বের দৃষ্টান্ত ব্যতীত নতুন সৃষ্ট কোন বিষয় বা বস্তু। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “বলুন,আমি তো কোন নতুন রাসূল নই”। আসলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাসূল হিসাবে নতুনই। কিন্তু এ আয়াতে বিদ‘আত শব্দের অর্থ হল এমন নতুন যার দৃষ্টান্ত ইতোপূর্বে গত হয়নি। আর উমার (রাঃ) তারাবীহর জামাত কায়েম করে বলেছিলেন “এটা উত্তম বিদ‘আত।” এখানেও বিদ‘আতের আভিধানিক অর্থ প্রযোজ্য।
ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় বিদ‘আতের সংজ্ঞা
ما أحدث في دين الله وليس له أصل عام ولا خاص يدل عليه.‘যা কিছু আল্লাহর দ্বীনে নতুন সৃষ্টি করা হয় অথচ এর সমর্থনে কোন ব্যাপক বা বিশেষ দলীল প্রমাণ নেই।’
অর্থাত নব সৃষ্ট বিষয়টি অবশ্যই দ্বীনের ব্যপারে বা ধর্মীয় ব্যাপারে বা আল্লাহর নৈকট্য লাভের ব্যাপারে হতে হবে।
যদি ধর্মীয় ব্যাপার ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ে নব-আবিস্কৃত কিছু দেখা যায় তা শরীয়তের পরিভাষায় বিদ‘আত বলে গণ্য হবে না,যদিও শাব্দিক অর্থে তা বিদ‘আত।
যদি ধর্মীয় ব্যাপার ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ে নব-আবিস্কৃত কিছু দেখা যায় তা শরীয়তের পরিভাষায় বিদ‘আত বলে গণ্য হবে না,যদিও শাব্দিক অর্থে তা বিদ‘আত।
এ প্রসঙ্গে আবুল হাসান আলী নদভী (রহঃ) তার ‘র্শিক ও বিদ‘আত’ কিতাবে বিদ‘আতের পরিচ্ছন্ন সংজ্ঞা উল্লেখ করেছেন। তা হল: যে বিশ্বাস বা কাজ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করেননি কিংবা পালন করার নির্দেশ দেননি সেই ধরনের বিশ্বাস বা কাজকে দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করা,এর অঙ্গ বলে সাব্যস্ত করা,সওয়াব বা আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় মনে করা, এই ধরনের কাজ করার নাম বিদ‘আত।
যে সকল বিশ্বাস ও কাজকে দ্বীনের অংশ মনে করে অথবা সওয়াব হবে ধারণা করে ‘আমল করা হয় তা বিদ‘আত। কারণ হাদীসে এসেছে : আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
“যে আমাদের এ ধর্মে এমন কোন নতুন বিষয় উদ্ভাবন করবে যা ধর্মে অন্তর্ভুক্ত ছিল না তা প্রত্যাখ্যাত হবে”। (বুখারী ও মুসলিম)
এ হাদীস দ্বারা স্পষ্ট হল যে,নতুন আবিস্কৃত বিষয়টি যদি ধর্মের অন্তর্ভুক্ত বা আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় বলে ধরে নেয়া হয় তাহলে তা বিদ‘আত ও প্রত্যাখ্যাত।
- হাদীসে আরো এসেছে:
“যে ব্যক্তি এমন কাজ করল যার প্রতি আমাদের (ইসলামের) নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত”।(মুসলিম)
এ হাদীসে “যার প্রতি আমাদের নির্দেশ নেই” বাক্যটি দ্বারা এ কথা বুঝানো হয়েছে যে, বিষয়টি ধর্মীয় হতে হবে।
ধর্মীয় বিষয় হিসাবে কোন নতুন ‘আমল করলেই বিদ‘আত হবে।
ধর্মীয় বিষয় হিসাবে কোন নতুন ‘আমল করলেই বিদ‘আত হবে।
যারা মাইকে আজান দেন তারা জানেন যে,
- আযান দেয়া সওয়াবের/ইবাদতের/আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়। কিন্তু, আজানে মাইক ব্যাবহারে আলাদা কোন মর্যাদা নেই বা আজানে মাইক ব্যবহার করা সওয়াবের কাজ বলে তারা মনে করেন না। এমনিভাবে বিমানে হজ্জে যাওয়া,
- প্রাতিষ্ঠানিক মাদ্রাসার প্রচলন,
- নাহু সরফের শিক্ষা গ্রহণ প্রভৃতি বিষয় ধর্মীয় বিষয়/সওয়াবের/ইবাদতের/আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় বলে মনে করা হয় না,
তাই তা বিদ‘আত হওয়ার প্রশ্ন আসে না। এ ধরনের বিষয়গুলি বিদ‘আত নয় বরং সুন্নাতে হাসানাহ বলা যেতে পারে।
অনেকে এ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বিদ‘আতকে দু’ভাগে ভাগ করার চেষ্টা করেন।
বিদ‘আতে হাসানাহ ও বিদ‘আতে সাইয়্যেআহ। সত্যি কথা হল বিদ‘আতকে এভাবে ভাগ করাটা হল আরেকটি বিদ‘আত এবং তা হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরিপন্থী।
বিদ‘আতে হাসানাহ ও বিদ‘আতে সাইয়্যেআহ। সত্যি কথা হল বিদ‘আতকে এভাবে ভাগ করাটা হল আরেকটি বিদ‘আত এবং তা হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের পরিপন্থী।
কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন
“সকল নব-আবিস্কৃত (দীনের মধ্যে) বিষয় হতে সাবধান! কেননা প্রত্যেকটি নব-আবিস্কৃত বিষয় বিদ‘আত,আর প্রত্যেকটি বিদ‘আত হল পথভ্রষ্টতা”। (আবূ দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ ও বাইহাকী)
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন সকল প্রকার বিদ‘আত ভ্রষ্টতা। এখন যদি বলা হয় কোন কোন বিদ‘আত আছে যা হাসানাহ বা উত্তম, তাহলে ব্যাপারটি সম্পূর্ণ হাদীসবিরোধী হয়ে যায়। তাই তো ইমাম মালিক (রঃ) বলেছেন :”যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোন বিদ‘আতের প্রচলন করে আর ইহাকে হাসানাহ বা ভাল বলে মনে করে, সে যেন প্রকারান্তরে এ বিশ্বাস পোষণ করে যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর পয়গাম পৌছাতে খিয়ানাত করেছেন। কারণ আল্লাহ তা‘আলা নিজেই বলেন: ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মকে পূর্ণ করে দিলাম।’ সুতরাং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে যা ধর্ম রূপে গণ্য ছিল না আজও তা ধর্ম বলে গণ্য হতে পারে না।
তাই বিদ‘আতে হাসানাহ বলে কোন কিছু নেই।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা বলেছেন আমরা তাই বলব; সকল প্রকার বিদ‘আত গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।
বিদ‘আতে হাসানায় বিশ্বাসীরা যা কিছু বিদ‘আতে হাসানাহ হিসাবে দেখাতে চান সেগুলো হয়ত শাব্দিক অর্থে বিদ‘আত, শরয়ী অর্থে নয় অথবা সেগুলো সুন্নাতে হাসানাহ। যে সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
من سن فى الإسلام سنة حسنة فله أجرها وأجر من عمل بها بعده من غير أن ينقص من أجورهم شيء، ومن سن في الإسلامسنة سيئة فله وزرها ووزر من عمل بها من بعده من غير أن ينقص من أوزارهم شيء. (رواه مسلم عن جرير بن عبد اللهرضي الله عنهما)অর্থ: “যে ইসলামে কোন ভাল পদ্ধতি প্রচলন করল সে উহার সওয়াব পাবে এবং সেই পদ্ধতি অনুযায়ী যারা কাজ করবে তাদের সওয়াবও সে পাবে, তাতে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামে কোন খারাপ পদ্ধতি প্রবর্তন করবে সে উহার পাপ বহন করবে, এবং যারা সেই পদ্ধতি অনুসরণ করবে তাদের পাপও সে বহন করবে, তাতে তাদের পাপের কোন কমতি হবে না”। (মুসলিম)
এখানে একটা প্রশ্ন হতে পারে যে, শবে বরাত উদযাপন, মীলাদ মাহফিল, মীলাদুন্নবী প্রভৃতি আচার-অনুষ্ঠানকে কি সুন্নাতে হাসানাহ হিসাবে গণ্য করা যায় না? মাইকে আজান দেয়া, মাদ্রাসার পদ্ধতি প্রচলন, আরবী ব্যাকরণ শিক্ষা ইত্যাদি কাজগুলো যদি সুন্নাতে হাসানাহ হিসাবে ধরা হয় তাহলে শবে বরাত, মীলাদ ইত্যাদিকে কেন সুন্নতে হাসানাহ হিসাবে গ্রহণ করা যাবে না?
পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে যে, বিদ‘আত হবে ধর্মীয় ক্ষেত্রে।
যদি নতুন কাজটি ধর্মের অংশ মনে করে অথবা সওয়াব লাভের আশায় করা হয়, তাহলে তা বিদ‘আত হওয়ার প্রশ্ন আসে।
আর যদি কাজটি ধর্মীয় হিসাবে নয় বরং একটা পদ্ধতি হিসাবে করা হয় তাহলে তা বিদ‘আত হওয়ার প্রশ্ন আসে না। যেমন ধরুন মাইকে আজান দেয়া। কেহ মনে করেনা যে, মাইকে আজান দিলে সওয়াব বেশী হয় অথবা মাইক ছাড়া আজান দিলে সওয়াব হবে না। তাই সালাত ও আজানের ক্ষেত্রে মাইক ব্যবহারকে বিদ‘আত বলা যায় না।
পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে যে, বিদ‘আত হবে ধর্মীয় ক্ষেত্রে।
যদি নতুন কাজটি ধর্মের অংশ মনে করে অথবা সওয়াব লাভের আশায় করা হয়, তাহলে তা বিদ‘আত হওয়ার প্রশ্ন আসে।
আর যদি কাজটি ধর্মীয় হিসাবে নয় বরং একটা পদ্ধতি হিসাবে করা হয় তাহলে তা বিদ‘আত হওয়ার প্রশ্ন আসে না। যেমন ধরুন মাইকে আজান দেয়া। কেহ মনে করেনা যে, মাইকে আজান দিলে সওয়াব বেশী হয় অথবা মাইক ছাড়া আজান দিলে সওয়াব হবে না। তাই সালাত ও আজানের ক্ষেত্রে মাইক ব্যবহারকে বিদ‘আত বলা যায় না।
তাই বলতে হয় বিদ‘আত ও সুন্নাতে হাসানার মধ্যে পার্থক্য এখানেই যে,
কোন কোন নতুন কাজ ধর্মীয় ও সওয়াব লাভের নিয়াত হিসাবে করা হয় আবার কোন কোন নতুন কাজ দ্বীনি কাজ ও সওয়াবের নিয়াতে করা হয় না বরং সংশ্লিষ্ট কাজটি সহজে সম্পাদন করার জন্য একটা নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়।
কোন কোন নতুন কাজ ধর্মীয় ও সওয়াব লাভের নিয়াত হিসাবে করা হয় আবার কোন কোন নতুন কাজ দ্বীনি কাজ ও সওয়াবের নিয়াতে করা হয় না বরং সংশ্লিষ্ট কাজটি সহজে সম্পাদন করার জন্য একটা নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়।
যেমন আমরা যদি ইতিপূর্বে উল্লিখিত হাদীসটির প্রেক্ষাপটের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই যে, একবার মুদার গোত্রের কতিপয় অনাহারী ও অভাবগ্রস্থ লোক আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এলো। তিনি সালাত আদায়ের পর তাদের জন্য উপস্থিত লোকজনের কাছে সাহায্য চাইলেন। সকলে এতে ব্যাপকভাবে সাড়া দিলেন। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কিরামের আগ্রহ ও খাদ্য সামগ্রী দান করার পদ্ধতি দেখে উল্লিখিত কথাগুলি বললেন। অর্থাৎ,
“যে ইসলামে কোন ভাল পদ্ধতি প্রচলন করল সে উহার সওয়াব পাবে এবং সেই পদ্ধতি অনুযায়ী যারা কাজ করবে তাদের সওয়াবও সে পাবে, তাতে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামে কোন খারাপ পদ্ধতি প্রবর্তন করবে সে উহার পাপ বহন করবে, এবং যারা সেই পদ্ধতি অনুসরণ করবে তাদের পাপও সে বহন করবে, তাতে তাদের পাপের কোন কমতি হবে না”। (মুসলিম)
অভাবগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য যে পদ্ধতি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে ওটাকে সুন্নাতে হাসানাহ বলা হয়েছে।
বলা যেতে পারে, সকল পদ্ধতি যদি হাসানাহ হয় তাহলে সুন্নাতে সাইয়্যেআহ বলতে কি বুঝাবে?
উত্তরে বলব, মনে করুন কোন দেশের শাসক বা জনগণ প্রচলন করে দিল যে এখন থেকে স্থানীয় ভাষায় আজান দেয়া হবে, আরবী ভাষায় দেয়া চলবে না। এ অনুযায়ী ‘আমল করা শুরু হল। এটাকে আপনি কি বলবেন? বিদ‘আত বলতে পারবেন না, কারণ যারা এ কাজটা করল তারা সকলে জানে অনারবী ভাষায় আজান দেয়া ধর্মের নির্দেশ নয় এবং এতে সওয়াবও নেই। তাই আপনি এ কাজটাকে সুন্নাতে সাইয়্যেআহ হিসাবে অভিহিত করবেন। এর প্রচলনকারী পাপের শাস্তি প্রাপ্ত হবে, আর যারা ‘আমল করবে তারাও।
আবার অনেক উলামায়ে কিরাম বিদ‘আতকে অন্যভাবে দু ভাগে ভাগ করে থাকেন। তারা বলেন বিদ‘আত দু প্রকার।
- একটা হল বিদ‘আত ফিদ্দীন (البدعةفيالدين) বা ধর্মের ভিতর বিদ‘আত।
- অন্যটা হল বিদ‘আত লিদ্দীন (البدعةللدين) অর্থাৎ ধর্মের জন্য বিদ‘আত।
প্রথমটি প্রত্যাখ্যাত আর অন্যটি গ্রহণযোগ্য।
আমার মতে এ ধরণের ভাগ নিষ্প্রয়োজন, বরং বিভ্রান্তি সৃষ্টিতে সহায়ক।
কারণ প্রথমতঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন সকল বিদ‘আত পথভ্রষ্টতা বা গোমরাহী। এতে উভয় প্রকার বিদ‘আত শামিল।
কারণ প্রথমতঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন সকল বিদ‘আত পথভ্রষ্টতা বা গোমরাহী। এতে উভয় প্রকার বিদ‘আত শামিল।
দ্বিতীয়তঃ অনেকে বিদ‘আত ফিদ্দীন করে বলবেন, আমি যা করেছি তা হল বিদ‘আত লিদ্দীন। যেমন কেহ মীলাদ পড়লেন। অতঃপর যারা এর প্রতিবাদ করলেন তাদের সাথে তর্কে লিপ্ত হয়ে অনেক দূর যেয়ে বললেন, মীলাদ পড়া হল বিদ‘আত লিদ্দীন – এর দ্বারা মানুষকে ইসলামের পথে ডাকা যায়। অথচ তা ছিল বিদ’আতে ফিদ্দীন (যা প্রত্যাখ্যাত) !
আসলে যা বিদ‘আত লিদ্দীন বা দ্বীনের স্বার্থে বিদ‘আত তা শরীয়তের পরিভাষায় বিদ‘আতের মধ্যে গণ্য করা যায় না। সেগুলোকে সুন্নাতে হাসানাহ হিসাবে গণ্য করাটাই হাদীসে রাসূল দ্বারা সমর্থিত।
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! বিদ‘আত সম্পর্কে এ কথাগুলো এখানে এ জন্য আলোচনা করলাম যাতে আলোচ্য বিষয়ের উপর কোন প্রশ্ন বা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হলে তার সমাধান যেন পাঠকবৃন্দ সহজে অনুধাবন করতে পারেন।
বইঃ “শবে বরাতঃ সঠিক দৃষ্টিকোণ”
সংকলনঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আবদুর রহমান (কুরানের আলো ডটকম)
No comments:
Post a Comment