আমার একজন বান্ধবী আছে। তার মা মারা গেছেন। সে সারাক্ষণ কান্নাকাটি করে। আসলে তার কী করা উচিত।
আলহামদুলিল্লাহ।
মৃত্যুর মুসিবত থেকে কেউ রক্ষা পাবে না। মৃত্যু আমাদের জন্য একটি পরীক্ষা। যেন আমরা নেক আমল করি, আমাদের আমলগুলোকে সুন্দর করি। যাতে করে আমরা উত্তম প্রতিদান পাই, আমাদের প্রতি আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্ট হন। কোন নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুতে দুঃখে ভারাক্রান্ত হওয়া, কান্নাকাটি করা- জায়েয বিষয়; যদি এটি প্রকৃতিগত হয়ে থাকে; এর সাথে চিৎকার, চেচামেচি অথবা আল্লাহর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ না পায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে তাঁর ছেলে ইব্রাহিমের মৃত্যুতে কেঁদেছেন। তিনি বলেছেন:
“চক্ষু অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে, মন ভারাক্রান্ত। তবে আমরা শুধু সেটাই উচ্চারণ করব যা আমাদের প্রতিপালককে সন্তুষ্ট করে। ইব্রাহিম! তোমার মৃত্যুতে আমরা দুঃখে ভারাক্রান্ত।”[সহিহ বুখারি (১২২০) ও সহিহ মুসলিম (৪২৭৯)]
তবে… এ কান্না ও দুঃখটা একটা সীমাবদ্ধ পর্যায়ে থাকা উচিৎ। যাতে করে ব্যক্তির দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ বিনষ্ট না হয়। কান্নাকাটি করতে করতে তার নিজের কাজকর্ম, দায়-দায়িত্ব ও আল্লাহর আনুগত্য পালনে ব্যাঘাত না ঘটে। বরঞ্চ তার কর্তব্য হবে ধৈর্য ধারণ করা ও কষ্ট হজম করা; যাতে করে সে ধৈর্যশীল হিসেবে সওয়াবের সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে, তার গুনাহ মার্জনা হয় এবং মর্যাদা সমুন্নত হয়।
আপনার বান্ধবীর জন্য উপদেশ হচ্ছে- এ মুসিবত ভুলে থাকার জন্য সে যেন পড়াশুনায় মনোনিবেশ করে, কুরআন তেলাওয়াত করে, জায়েয পর্যায়ের ক্রীড়া কৌতুক করে। আল্লাহর কাছে দুশ্চিন্তা ও বিষণ্ণতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে। একাকী ও নিভৃতে না থাকে। কারণ একাকী থাকলে শয়তান তার উপর আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হবে।
তার জানা উচিৎ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীকে মৃতব্যক্তির জন্য তিনদিনের অধিক সময় শোক প্রকাশ করতে বারণ করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “মৃত্যব্যক্তির জন্য তিনদিনের বেশি শোক করা আল্লাহ ও পরকালের উপর ঈমানদার নারীর জন্য নাজায়েয। তবে নারী তার স্বামীর জন্য ৪ মাস ১০ দিন শোক পালন করবে।” [সহিহ বুখারি (১২৮০) ও সহিহ মুসলিম (১৪৮৬)]
অতএব, কারো মৃত্যুর কারণে কোন নারীর জন্য তিনদিনের বেশি সাজসজ্জা ত্যাগ করে বিষণ্ণ হয়ে কাটানো জায়েয নয়। তবে স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রী গোটা ইদ্দতকালীন সময় সাজসজ্জা ত্যাগ করবে।
আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন, তাকে ধৈর্য ধরার তাওফিক দেন এবং তাকে তাঁর আনুগত্যের পথে কাজে লাগান।
আল্লাহই ভাল জানেন।
আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন, তাকে ধৈর্য ধরার তাওফিক দেন এবং তাকে তাঁর আনুগত্যের পথে কাজে লাগান।
আল্লাহই ভাল জানেন।
No comments:
Post a Comment