প্রশ্নঃ আকিকার হুকুম কি, কখন করতে হয়? আকিকার মাংস কে খেতে পারে?
গরু দিয়ে আকিকা করা যাবে কি?কোরবানীর সাথে ভাগে আকীকা দেয়া যাবে কি?
==================
উত্তরঃ ইসলামের পরিভাষায় সন্তান জন্ম গ্রহণ করার পর আল্লাহর শুকরিয়া ও আনন্দের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যে পশু জবাই করা হয়, তাকে আকীকা বলা হয়।
১-আকীকার হুকুমঃ- অধিকাংশ আলেমের মতে সন্তানের আকীকা করা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। রাসূসুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
“যে ব্যক্তি তার সন্তানের আকীকা করতে চায়, সে যেন উহা পালন করে”। (আহমাদ ও আবু দাউদ)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আরও বলেনঃ
প্রতিটি সন্তানই আকীকার বিনিময়ে আটক থাকে”। (আহমাদ, তিরমিজী ও অন্যান্য সুনান গ্রন্থ)
২-আকীকা করার সময়ঃ -আকীকার জন্য উত্তম সময় হলো সন্তান ভুমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিবস। সপ্তম দিনে আকীকা করার সাথে সাথে সন্তানের সুন্দর নাম রাখা, মাথার চুল কামানো এবং চুল এর সমপরিমাণ ওজনের রৌপ্য ছাদকাহ করাও মুস্তাহাব। (তিরমিজী)
বিনা কারণে আকীকা দেওয়াতে বিলম্ব করা সুন্নাতের বিরোধীতা করার অন্তর্ভুক্ত। দারিদ্র বা অন্য কোন কারণে যদি ৭ দিনে আকীকা করতে অক্ষম হয়, তবে যখনই অভাব দূর হবে, তখনই আকীকা করা জায়েজ আছে।
৩-কোন ধরণের পশু দিয়ে আকীকা করতে হবে? সংখ্যা কয়টি?
আকীকার ক্ষেত্রে সুন্নাত হলো, ছেলে সন্তান হলে দু‘টি দুম্বা বা ছাগল আর মেয়ে সন্তান হলে একটি দুম্বা বা ছাগল দিয়ে আকীকা করা। কেননা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ
“ছেলে সন্তানের পক্ষ থেকে দু‘টি সমবয়সের ছাগল এবং মেয়ে সন্তানের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দিয়ে আকীকা দিতে হবে। (আহমাদ ও তিরমিজী) আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে যদি ছেলে সন্তানের পক্ষ থেকে দু‘টি ছাগল দিয়ে আকীকা দিতে না পারে, তবে একটি দিয়ে আকীকা দিলেও চলবে।
৪-আকীকার গোশত কে খেতে পারে?
আকীকার গোশত কুরবানীর গোশতের মতই। তা নিজে খাবে, আত্মীয় স্বজনকে খাওয়াবে এবং গরীব-মিসকীনকে ছাদকা করবে। আকীকার গোশতও কুরবানির মত তিন ভাগ করা জরুরী নয়। আকীকার গোশত যদি সম্পূর্ণটাই রান্না করে এবং আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব এবং অন্যান্য মুসলমানদেরকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ায় তাতেও যথেষ্ট হবে।
৫-গরু দিয়ে আকীকা করাঃ
কোন হাদীসেই গরু দিয়ে আকীকা করার কথা উল্লেখ হয়নি। অথচ রাসূলুল্লাহ(সাঃ) এর যুগে সবধরণের পশুই বিদ্যমান ছিল। সুতরাং উত্তম হচ্ছে ছাগল বা দুম্বা দিয়েই আকীকা করা।
৬-কোরবানীর সাথে ভাগে আকীকা দেয়াঃ
আমাদের দেশে সাতভাগে গরু দিয়ে কুরবানী করার ক্ষেত্রে আকীকার অংশীদার হওয়ার নিয়ম ব্যপকভাবে প্রচলিত আছে। এটি হাদীছ সম্মত নয়। আকীকা যেহেতু একটি এবাদত, তাই হাদীছে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে সেভাবেই পালন করা উচিত।
-লেখক: আব্দুল্লাহ শাহেদ আল মাদানী[দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদী আরব।]
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
প্রশ্ন: সুদী ব্যাংকে চাকুরী করার বিধান সম্পর্কে অজ্ঞ থাকার কারণে যদি কেউ সারা জীবন সুদী ব্যাংকে চাকুরী করে তাহলে চাকুরী থেকে অব্যহতি নেয়ার পর তার জন্য করণীয় কি?
প্রশ্ন: সুদী ব্যাংকে চাকুরী করার বিধান সম্পর্কে অজ্ঞ থাকার কারণে যদি কেউ সারা জীবন সুদী ব্যাংকে চাকুরী করে তাহলে চাকুরী থেকে অব্যহতি নেয়...
-
চাশতের নামায মসজিদে পড়ার পৃথক ফযীলত হযরত আবু উমামা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহ রসূল (সাঃ) বলেন “যে ব্যক্তি কোন ফরয নামায আদায়ের উদ্দেশ্...
-
সালাত বা নামায কায়েম হবে কিভাবে? সালাত বা নামাজ কায়েম হওয়ার ২৬ টি উপায় দেয়া হলোঃ মহান আল্লাহ কুরআন মাজীদে ও তাঁর রসূলের মুখে আমাদেরকে...
-
ঈমানী দুর্বলতার লক্ষণ, কারণ ও চিকিৎসা গুলি কি? ==================== দুর্বল ঈমানের লক্ষণ- ১। পাপে নিমজ্জিত হওয়া, হারাম কাজ করা। ২। অন্তকর...
-
১১২।সুরাহ আল ইখলাস(1-4) 112.সুরাহ আল ইখলাস(1-4) ﺑِﺴﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣﻤٰﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣﻴﻢِ – শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম ক...
-
কিয়ামতের দিন শাফায়াত লাভের জন্য কতিপয় আমল: ১) একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহর ইবাদত করা ও তাওহীদ বাস্তবায়ন করা: আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। রাসূল...
-
হারাম বস্ত্ত দিয়ে চিকিৎসা করা হারাম বস্ত্ত দিয়ে চিকিৎসা করাও হারাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: إِنَّ اللهَ تَعَ...
-
১০৭। সুরাহ আল মাউন (1-7) 107.সুরাহ আল মাউন (1-7) Rate This ﺑِﺴﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣﻤٰﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣﻴﻢِ – শুরু করছি আল্লা...
-
প্রশ্নঃ আল্লাহ তাআ’লা সম্পর্কে শয়তান একজন মানুষকে এমন ওয়াস্ ওয়াসা (কুমন্ত্রনা) প্রদান করে যে, সে ঈমান চলে যাওয়ার আশঙ্কা করে। এ সম্পর্কে আপ...
-
যদি সবকিছু পূর্ব নির্ধারিত হয়ে থাকে তাহলে সেগুলো সম্পাদনের জন্যে মানুষকে জবাবদিহি করতে হবে কেন ? যেকোন পাপকার্য সম্পাদনের ঘটনা কি তা...
-
মুসলিম জীবনে সততা ও সত্যবাদিতা আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁَﻣَﻨُﻮﺍ ﺍﺗَّﻘُﻮﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﻛُﻮﻧُﻮﺍ ﻣَﻊَ ﺍﻟﺼَّﺎﺩِﻗِﻴﻦَ “হে মুমিনগণ,...
No comments:
Post a Comment