Thursday, August 2, 2018

প্রশ্ন:- রাসুল (সাঃ) এর ছায়া ছিলনা একথা কি সত্য?

প্রশ্ন:- রাসুল (সাঃ) এর ছায়া ছিলনা একথা কি সত্য? 
উঃ:- কথাটি সত্য নয়।
(১) নবীজি (সা)-এর ছায়া ছিল, একথা নবীজি (সা)-এর হাদিস দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। মনে রাখবেন, ফেরেশতারা আল্লাহ তায়ালার সম্মানিত সৃষ্টি জীব। তারা খায় না, বিয়ে শাদীও করেন না। তারা নর এবং নারী কোনোটাই নন। তাদের ছায়াও নেই। কেননা, তারা নূরের সৃষ্ট। অধিকন্তু নূরের তৈরি যারা তারা খায় না, তাদের কোনো লিঙ্গও হয়না; ফলে তাদের বিয়েশাদিও নেই এবং তাদের কোনো ছায়াও থাকেনা। অথচ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তিনি খেতেন, পুরুষ মানুষ ছিলেন, বিয়ে শাদী করেছিলেন এবং তাঁর ছায়াও ছিল। তাঁর ছায়া ছিল মর্মে দলিলের জন্য দেখা যেতে পারে :

১- মুসতাদরিকে হাকিম : ৫/৬৪৮, হা/ ৮৪৫৬। রাবী হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা)।
২- সহিহ ইবনে খোজাইমাহ : ২/৫০; হা/৮৯, রাবী হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা)।
৩- মুসনাদে আহমদ : ৪৪/৪৩৭; হা/২৬৮৬৬, রাবী হযরত সুফিয়া বিনতে হুইয়াই (রা)।
৪- মুসনাদে আহমদ : ৪১/৪৬৩; হা/২৫০০, রাবী হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা)।
কাজেই মুহাম্মদ (সাঃ) মানুষের সন্তান হিসেবে মানুষের মতই মাটির তৈরি, কিন্তু নূরের তৈরি নন। এটি শুধু কুরআন হাদিসের দাবি নয়, বরং বিবেক এবং প্রকৃতির দাবিও।
(২) বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ছায়া ছিল কিনা -এর সঠিক তথ্য নবী কিংবা তাঁর নিকটতম সাহাবায়ে কেরামদের নিকটই ছিল। তাঁরা যেহেতু প্রত্যক্ষদর্শী সেহেতু তাঁদের নিকটই প্রশ্ন করা যেতে পারে যে, বিশ্বনবীর ছায়া মুবারক ছিল কিনা?
এখানে বিশ্বনবী (সাঃ)-এর ছায়া মুবারকের পক্ষে হাদিস শরীফ দ্বারা দলিল দেয়া হবে। এবার দেখা যাক তাঁর ছায়া ছিল কিনা? বিশ্বনবী (সাঃ) নিজেই নিজের ছায়া দেখেছিলেন বলে প্রমাণিত। এ হাদিস তার দলিল–
.
ﻋﻦ ﺍﻧﺲ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺽ ﻗﺎﻝ ﺑﻴﻨﻤﺎ ﺻﻠﻌﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﺫﺍﺕ ﻟﻴﻠﺔ ﺻﻠﻮﺓ ﺍﺫ ﻣﺪ ﻳﺪﻩ ﺛﻢ ﺍﺧﺮﻫﺎ ﻓﻘﻠﻨﺎ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺭﺃﻳﻨﺎﻙ ﺻﻨﻌﺖ ﻓﻲ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﺷﻴﺌﺎ ﻟﻢ ﺗﻜﻦ ﺗﺼﻨﻊ ﻓﻴﻤﺎ ﻗﺒﻠﻪ ﻗﺎﻝ ﺍﺟﻞ ﺍﻧﻪ ﻋﺮﺿﺖ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻓﺮﺃﻳﺖ ﻓﻴﻬﺎ ﺩﺍﻟﻴﺔ ﻗﻄﻮﻓﻬﺎ ﺩﺍﻧﺒﺔ ﻓﺎﺭﺩﺕ ﺍﻥ ﺍﺗﻨﺎﻭﻝ ﻣﻨﻬﺎ ﺷﻴﺌﺎ فاوحي ﺍﻟﻲ ﺍﻥ ﺍﺳﺘﺄﺧﺮ ﻓﺎﺳﺘﺄﺧﺮﺕ ﻋﺮﺿﺖ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺑﻴﻨﻲ ﻭ ﺑﻴﻨﻜﻢ ﺣﺘﻲ ﺭﺃﻳﺖ ﻇﻠﻲ ﻭ ﻇﻠﻜﻢ ﻓﻴﻬﺎ
ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ ﻓﻲ ﻣﺴﺘﺪﺭﻛﻪ ﻭ ﻗﺎﻝ ﻫﺬﺍ ﺣﺪﻳﺚ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻻﺳﻨﺎﺩ ﻭ ﻟﻢ ﻳﺨﺮﺟﺎﻩ
.
অর্থ , হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত রয়েছে, তিনি বলেন কোনো এক রাতে রাসূল (সাঃ) নামায পড়াচ্ছিলেন। তিনি সহসা সামনের দিকে হাত বাড়ান এরপর তা আবার পেছনের দিকে টেনে নেন। নামাজ শেষে আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ), এ নামাযে আপনাকে এমন কাজ করতে দেখেছি যা ইতিপূর্ব কখনো করেননি।
তিনি ইরশাদ করেন, হ্যাঁ। আমার কাছে জান্নাত উপস্থিত করা হয়েছিল। তাতে বিশাল বৃক্ষরাজি দেখতে পেলাম যেগুলোর ছড়া ঝুঁকানো ছিল। তা থেকে কিছু নিতে চাইলে আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হল আপনি পেছনে সরে দাঁড়ান। আমি সরে দাঁড়ালাম। তারপর আমার নিকট জাহান্নাম উপস্থিত করা হল, যার আলোতে আমি আমার এবং তোমাদের (সাহাবিদের) ছায়া পর্যন্ত দেখেছি।”
(দলিল : মুসতাদরিকে হাকেম-৫/৬৪৮, সহিহ ইবনে খোজাইমাহ-২/৫০)।
.
ﻭﻳﺌﺴﺖ ﻣﻨﻪ ﻓﻠﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﺷﻬﺮ ﺭﺑﻴﻊ ﺍﻷﻭﻝ ﺩﺧﻞ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﻓﺮﺃﺕ ﻇﻠﻪ ﻓﻘﺎﻟﺖ ﺇﻥ ﻫﺬﺍ ﻟﻈﻞ ﺭﺟﻞ ﻭﻣﺎ ﻳﺪﺧﻞ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻤﻦ ﻫﺬﺍ ﻓﺪﺧﻞ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
.
অনুবাদ : এমনকি হযরত যায়নব (রাঃ) রাসূল (সাঃ) এর আগমন থেকে নিরাশ হয়ে গেলেন। রবীউল আওয়ালে তার নিকট যান। ঘরে প্রবেশের প্রক্কালে যয়নব (রাঃ) তাঁর ছায়া দেখতে পান এবং বলেন, এতো কোন পুরুষ মানুষের ছায়া বলে মনে হয়। তিনি তো আমার কাছে আসেন না। তাহলে এ ব্যক্তি কে? ইত্যবসরে রাসূল (সাঃ) প্রবেশ করেন। {সূত্র : মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৬৮৬৬}।

No comments:

Post a Comment

প্রশ্ন: সুদী ব্যাংকে চাকুরী করার বিধান সম্পর্কে অজ্ঞ থাকার কারণে যদি কেউ সারা জীবন সুদী ব্যাংকে চাকুরী করে তাহলে চাকুরী থেকে অব্যহতি নেয়ার পর তার জন্য করণীয় কি?

প্রশ্ন: সুদী ব্যাংকে চাকুরী করার বিধান সম্পর্কে অজ্ঞ থাকার কারণে যদি কেউ সারা জীবন সুদী ব্যাংকে চাকুরী করে তাহলে চাকুরী থেকে অব্যহতি নেয়...