

উত্তর :প্রশ্ন : হাত থেকে কোরআন শরীফ পরে গেলে করনীয় কী?
•••••••••••••••••••••••
•••••••••••••••••••••••
উত্তর : অসর্তকতা বশত: হাত থেকে কুরআন পড়ে গেলে এজন্য জন্য আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার করলেই যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ এবং আগামীতে সর্তক থাকতে হবে যেন, কোনভাবে কুরআনের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন না করা হয়।
উল্লেখ্য যে, আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে যে,
কুরআন হাত থেকে পড়লে কুরআনের ওজন বরাবর চাল সদকা করতে হবে। এটি একটি ভুল কাজ। ইসলামী শরীয়তে এমন কোন নির্দেশনা আসে নি। তাই তা বর্জনীয়। রাসূল (সা) বলেছেন “যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনে (নিজের পক্ষ থেকে) কোন নতুন কিছু উদ্ভাবন করল--- যা তাঁর মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।” (বুখারী ও মুসলিম)উল্লেখ্য যে, আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে যে,
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, “যে ব্যাক্তি এমন কাজ করল, যে ব্যপারে আমাদের নির্দেশ নেই, তা বর্জনীয়।”

-- কুরআনের সম্মান বজায় রাখার স্বার্থে কুরআনের মধ্যে এমন কোন চিহ্ন বসানো উচিৎ নয় যাতে তার সৌন্দর্যের বিকৃতি ঘটায়। কুরআনকে সর্বোচ্চ পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে সচেতন থাকা জরুরি। তবে একান্ত দরকারে (যেমন, মুখস্থ করার সুবিধার্থে) চিহ্ন দেয়ার প্রয়োজন হলে, আয়াতের নিচে বা উপরে সাধারণ কাঠ পেন্সিল ব্যাবহার করা যেতে পারে, যেন তা প্রয়োজন শেষে মুছে ফেলা যায়। এ ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্ন রাবার ব্যাবহার করা উচিৎ।
কিন্তু বলপেন, সাইনপেন বা এমন কালি ব্যবহার করা উচিৎ নয় পরে উঠিয়ে ফেলা সম্ভব হয় না। আল্লাহু আলাম








উত্তর : কুরআনের পৃষ্ঠাগুলোকে সহজে উল্টানের সুবাধার্থে এমনটি করা হয়। এটা দরকারে জায়েয হলেও যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা উত্তম। কেননা, তা কুরআনের আদবের সাথে সঙ্গতীপূর্ণ নয়। তাই এমনটি না করাই ভালো।আল্লাহু আলাম।
〰
〰
〰
〰
〰
〰
〰
♦








*কুরআন সম্পর্কে কতিপয় ভুল বিশ্বাস ও আচরণ:*
➖
➖
➖
➖
➖
➖
➖
➖
➖
➖
➖
🔘 ১) অর্ধ শাবানের রাতে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে বলে বিশ্বাস করা। অথচ তা অবতীর্ণ হয়েছে রামাযান মাসের কদরের রাতে। (সূরা বাকারা: ১৮৫ ও সূরা কদর)
🔘 ২) কবর জিয়ারত করতে গিয়ে কুরআন (সূরা ফাতিহা, নাস, ফালাক, ইখলাস ইত্যাদি সূরা) পাঠ করা। এটি দলীল বহির্ভূত কাজ হওয়ার কারণে বিদয়াত।রাসূল (সা) বলেছেন “যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনে (নিজের পক্ষ থেকে) কোন নতুন কিছু উদ্ভাবন করল--- যা তাঁর মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।” (বুখারী ও মুসলিম)
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, “যে ব্যাক্তি এমন কাজ করল, যে ব্যপারে আমাদের নির্দেশ নেই, তা বর্জনীয়।”
🔘 ৩) মৃত শয্যায় শায়িত ব্যক্তির পাশে কুরআন পাঠ করা। এটি বিদআত। অথচ সুন্নত হচ্ছে, মৃত্যু পথযাত্রীকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ র তালকীন দেয়া বা তাকে শুনিয়ে কালিমা পাঠ করা।
🔘 ৪) কুরআন খতম (শবিনা খতম) করে তার সওয়াব মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে বখশীয়ে দেয়া। এটিও দলীল বহির্ভূত হওয়ার কারণে বিদআত।
🔘 ৫) অসর্তকতা বশত: হাত থেকে কুরআন পড়ে গেলে তার ওজন বরাবর চাল সদকা করা। এটি শরীয়তের কোন বিধান নয়। বরং এজন্য জন্য আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার করা প্রয়োজন।
🔘 ৬) না বুঝে কুরআন তিলাওয়াত করলে সওয়াব হবে না বলে ধারণা করা। এ ধারণা ঠিক নয়। সঠিক কথা হচ্ছে, বুঝে হোক অথবা না বুঝে হোক কুরআন পাঠ করলে প্রতিটি অক্ষরে ১টি করে (যা ১০টি নেকীর সমান) সওয়াব অর্জিত হবে। তবে কুরআন বুঝার চেষ্টা করা ও কুরআন নিয়ে গবেষণা করা নি:সন্দেহে উত্তম কাজ।
🔘 ৭) কুরআন তেলাওয়াতের শেষে ‘সাদাকাল্লাহুল আজীম’ (আল্লাহ সত্য বলেছেন) বলাকে সুন্নত মনে করা ঠিক নয়। কারণ, এর কোন শরয়ী ভিত্তি নাই। সুতরাং এটিকে নিয়ম করে পাঠ করা ঠিক নয়।
🔘 ৮) কুরআন হাতে নিয়েই তাতে চুমু খাওয়া। এটিকে নিয়ম করে নেয়া ঠিক নয়। তবে হঠাৎ আবেগে চুমু খেলে তাতে সমস্যা নাই।
🔘 ৯) এ বিশ্বাস করা যে, হাদীস মানার প্রয়োজন নাই। কেবল কুরআন মানাই যথেষ্ট। এটি মুসলিম উম্মাহকে পথভ্রষ্ট করার এক গভীর ষড়যন্ত্র। হাদীস ব্যতিরেকে কুরআন বুঝা আদৌ সম্ভব নয়।
🔘 ১০) সিডি, ক্যাসেট, মোবাইল ইত্যাদিতে কুরআন তিলাওয়াত চালু করে গল্প-গুজবে ব্যস্ত থাকা বা তার প্রতি অমনোযোগিতা প্রকাশ করা। এটি কুরআনের প্রতি অবহেলার শামিল। আল্লাহ তায়ালা কুরআন তিলাওয়াত হলে চুপ থেকে মনোযোগ সহকারে শুনার নির্দেশ নিয়েছেন। (সূরা আরাফ: ২০৪)
🔘 ১১) মোবাইলে রিংটোন হিসেবে কুরআন তিলাওয়াত রাখা উচিৎ নয়। কারণ, তা টয়লেট বা অপবিত্র স্থানে বেজে উঠতে পারে। তাছাড়া রিং বাজলে আল্লাহর কথাকে কেটে দিয়ে মানুষের সাথে কথা বলা শুরু হয়। আল্লাহর বাণীর সাথে এরূপ আচরণ শোভনীয় নয়। অনুরূপভাবে মোবাইলের ওয়াল পেপার হিসেবে কুরআনের আয়াত সম্বলিত ছবি সেট করা উচিৎ নয়। কারণ, নাপাক স্থানে তা প্রকাশিত হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
🔘 ১২) কুরআনের আয়াতকে ঘরের শোভা বর্ধন, বরকত নাজিল বা জিন-ভুত, যাদু, অসুখ-বিসুখ বা কোন কিছুর ক্ষতির আশংকা থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে লটকায়ে রাখা নাজায়েজ। তবে শিক্ষা বা স্মরণ করার উদ্দেশ্য হলে তা জায়েজ আছে।













মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, “যে ব্যাক্তি এমন কাজ করল, যে ব্যপারে আমাদের নির্দেশ নেই, তা বর্জনীয়।”











------------------------------------
গ্রন্থনায়: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদীনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব
লিসান্স, মদীনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব
No comments:
Post a Comment