Thursday, July 5, 2018

মাহরাম_কি ? মাহরাম কারা? গায়রে মাহরাম কি? গায়রে মাহরাম কারা?

মাহরাম_কি ?
- যে সকল পুরুষের সামনে নারীর
দেখা দেওয়া,কথা বলা জায়েজ এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন সম্পূর্ণ হারাম তাদের কে শরীয়তের পরিভাষায় মাহরাম বলে|


মাহরাম কারা?
-সূরা আন নূরের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নারীর মাহরাম নির্ধারিত করে দিয়েছেন|

গায়রে মাহরাম কি?
- যে সকল পুরুষের সামনে যাওয়া
নারীর জন্য শরীয়তে জায়েজ নয়
এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন বৈধ তাদের কে গায়রে মাহরাম বলে|

→বস্তুতঃ

গায়রে মাহরামের সামনে একান্ত অপারগ হয়ে যদি যাওয়াই লাগে তবে নারী পূর্ণ পর্দা করে সামনে যাবে|

♪গায়রে মাহরাম কারা?
-মাহরাম বাদে সমস্ত বিশ্বে-মহাবিশ্বের যত পুরুষ আছে সব গায়রে মাহরাম!!!

নিজ পরিবারে চাচাত/খালাত/মামাত/ফুপাত সব ভাই, নিজ দুলাভাই, দেবর, ভাসুর,
(আপন,দাদা ও নানা শ্বশুর বাদে) সমস্ত চাচা-মামা-খালু-ফুপা শ্বশুর...

নিজ খালু/ফুপা এরা সবাই গায়রে মাহরাম! তাদের সামনে নিজেকে প্রদর্শন করা আল্লাহর হুকুমের অবাধ্যতা করা!

মাহরাম ছাড়া সকল পুরুষের সামনে পর্দা করতে হবে এবং হবেই...

→এক নজরে মাহরাম পুরুষ -
১. স্বামী
(দেখা দেওয়া,সৌন্দর্য প্রদর্শনের
প্রেক্ষিতে মাহরাম)
২. পিতা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
৩. শ্বশুর, আপন দাদা ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
৪. আপন ছেলে, ছেলের ছেলে,
মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরসজাত
পুত্র সন্তান এবং আপন মেয়ের
স্বামী।
৫. স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত
পুত্র।
৬. আপন ভাই,সৎ ভাই
৭. ভাতিজা অর্থাৎ, আপন ভাইয়ের ছেলে এবং সৎ ভাইয়ের ছেলে।
৮. ভাগ্নে অর্থাৎ, আপন বোনের
ছেলে এবং সৎ বোনের ছেলে।
৯. এমন বালক যার মাঝে মহিলাদের প্রতি
কোন আকর্ষণ নেই।
(সূরা নূর-৩১)।

১০. দুধ সম্পর্কীয় পিতা, দাদা, নানা, চাচা, মামা এবং তাদের উর্ধ্বতন পুরুষগণ।
১১. দুধ ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের
ঔরসজাত যে কোন পুত্র সন্তান।


১২. দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, তার
ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের
ছেলে এবং তাদের ঔরসজাত যে
কোন পুত্র সন্তান। এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী।
(বুখারী শরীফ হাদীস নং ৫০৯৯, মুসলিম শরীফ হাদীস নং ১১৪৪)।

১৩. আপন চাচা, সৎ চাচা।
১৪. আপন মামা,সৎ মামা।
(সূরা নিসা-২৩)।

→উপরোক্ত পুরুষ যাদের সাথে দেখা করতে বা দেখা দিতে পারবে তারা ছাড়া অন্য সমস্ত পুরুষকে দেখা দেওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয এবং হারাম।

চেহারাও_পর্দার_অন্তর্ভুক্ত
এক শ্রেণীর লোক নারীর
চেহারাকে পর্দার অন্তর্ভুক্ত মনে
করে না । অথচ চেহারা পর্দার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চেহারা পর্দার অন্তর্ভূক্ত না হওয়ার ব্যাপারে
(সূরা নূরের ৩১ নং আয়াত)...
উল্লেখ করা হয়।

আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, ‘তারা যেন তাদের সৌন্দর্য
প্রকাশ না করে তবে যা সাধারণত
প্রকাশমান’। অথচ হিজাবের মূল আয়াত এটি নয়। পর্দার বিষয়ে এই আয়াত দ্বারা দলীল দেওয়া এবং এই আয়াতকেই একমাত্র দলীল মনে করা ভুল ।

মূলত পর্দার আয়াত হল সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াত
‘হেনবী আপনার স্ত্রী ও
অন্যদেরকে এবং মুমিনদের
স্ত্রীদেরকে বলুন, তারা যেন চাদর
নিজেদের উপর টেনে নেয়’।

→ইমাম সূয়ূতী র. বলেন, এটি সকল নারীর জন্য হিজাবের আয়াত । এতে মাথা ও চেহারা ঢাকা ওয়াজিব করা হয়েছে।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. উক্ত আয়াতের তাফসীরে বলেন, আল্লাহ তা’আলা মুমিনদের স্ত্রীদের।আদেশ করেছেন তারা যেন প্রয়োজনের মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় উপর দিয়ে পর্দাঝুলিয়ে চেহারা ঢেকে রাখে এবং শুধু
এক চোখ খোলা রাখে।
(তাফসীরেইবনে কাসীর: ৩/৮২৪)


→প্রখ্যাত ফকীহ তাবেয়ী উবাদা
আসলামী রা. দেখিয়েছেন,
কীভাবে নারীগণ এই আয়াতের উপর আমল করেন। তিনি তাঁর চাদর দিয়ে এমনভাবে মুখমন্ডল আবৃত করলেন যে, নাক ও বাম চোখ আবৃত হয়ে গেল। শুধু ডান চোখ খোলা থাকল। তদ্রুপ মাথার উপর থেকে কপাল ও চোখের ভ্রুও আবৃত হল ।

(তাফসীরে তাবারী, আদ্দুররুল মানসুর ৫/২২১, আহকামুল কোরআন- জাসসাস: ৩/৩৭১; তাফসীরে কাশশাফ ৩/২৭৪;
আহকামুল কোরআন- ইবনুল আরাবী ৩/১৫৮৫-১৫৮৭;
যাদুল মাসীর ফী ইলমিত তাফসীর ৬/৪২২;
আদ্দুররুল মানসুর ৫/২২১; আনওয়ারুত তানযীল ওয়া
আসরারুত তাবীল ২/২৮০; তাফসীওে কুরতুবূ ১৪/২৪৩-২৪৪।

→উল্লেখ্য, সূরা নূরের ৩১ নং আয়তে মূলত সতরের সীমারেখা বর্ণনা করা হয়েছে। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় -

©হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে হাত এবং মুখ খোলা রাখার তথাও বর্ণিত হয়েছে। তবে এ বর্ণনাগুলোর অধিকাংশই নেহায়েত দুর্বল । দু’একটি গ্রহণযোগ্য বর্ণনা রয়েছে। সে হিসাবে এটি এ আয়াতের
একটি ব্যাখা ।

→আয়াতের অন্য আরেকটি ব্যাখ্যা হল,
‘মা যাহারা মিনহা’
(অর্থাৎ যা সাধারনত প্রকাশমান) দ্বারা উদ্দেশ্য কাপড় । প্রখ্যাত সাহাবী ; 
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. এই ব্যাখ্যাই করেছেন ।

→ইমাম ইবনে কাসীর র. এই মতকে প্রধান্য দিয়ে বলেন, হযরত হাসান, ইবনে সীরিন, আবুল জাওযা, আব্দুর রহীম নাখয়ী, হযরত ইবনে মাসঊদ রা. এর অনুরূপ মত ব্যক্ত করেছেন।

ইবনে জাওযী র. আরো বলেন,
ইমাম আহমদ র.ও বলেছেন যে,
প্রকাশ্য সৌন্দর্য হল কাপড়, আর নারীর শরীরের সব কিছু এমনকি নখও পর্দার অন্তর্ভুক্ত ।
( যাদুল মাসীর ৬/৩১)।

আর ইবনে আব্বাস রা. এর ব্যাখ্যা গ্রহণ করলেও এই আয়াত পরবর্তীতে নাযিলকৃত হিযাবের আয়াত দ্বারা মানসুখ
(রহিত) হয়েছে ।

→শাইখ ইবনে তাইমিয়া
র. সহ আরো কিছু মনীষীও এই মত পোষণ করেন।

আয়েশা রা. এর ‘ইফক’এর ঘটনায় উল্লেখিত হাদীস নসখের সুস্পষ্ট প্রমাণ।

আম্মাজান হযরত আয়েশা রা.
বলেন, আমি যখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তখন সফওয়ান ইবনে মুয়াত্তাল আমার নিকটে এসে আমাকে দেখে চিনে ফেলল। কেননা, সে আমাকে হিজাবের হুকুম নাযিল হওয়ার আগে
দেখেছিলেন। সে তখন ইন্নালিল্লাহ
বলল । আমি তার ইন্নালিল্লাহ বলার শব্দে জেগে উঠি । তখন আমি ওড়না দিয়ে আমার মুখ ঢেকে ফেলি’।
( সহীহ বুখারী ৫/৩২০; সহীহ
মুসলিম হাদীস ২৭৭০; জামে তিরমিযী হাদীস ৩১৭৯)।

প্রকাশ থাকে যে, সাহাবায়ে কেরাম
হিজাবের আয়াত নাযিল হওয়ার পর চেহারায় পর্দা করতেন, যা আম্মাজান আয়েশা রা.
এর উক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

No comments:

Post a Comment

প্রশ্ন: সুদী ব্যাংকে চাকুরী করার বিধান সম্পর্কে অজ্ঞ থাকার কারণে যদি কেউ সারা জীবন সুদী ব্যাংকে চাকুরী করে তাহলে চাকুরী থেকে অব্যহতি নেয়ার পর তার জন্য করণীয় কি?

প্রশ্ন: সুদী ব্যাংকে চাকুরী করার বিধান সম্পর্কে অজ্ঞ থাকার কারণে যদি কেউ সারা জীবন সুদী ব্যাংকে চাকুরী করে তাহলে চাকুরী থেকে অব্যহতি নেয়...