বে-নামাযী / আধা নামাযীর বিধান .
=============================
বে-নামাযীর বিধান সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই আমাদেরকে বুঝতে হবে যে, বে-নামাযী কাকে বলে।
এর সহজ উত্তর হলঃ যে ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত ত্যাগ করে।
বে-নামাযীর বিধান সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই আমাদেরকে বুঝতে হবে যে, বে-নামাযী কাকে বলে।
এর সহজ উত্তর হলঃ যে ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত ত্যাগ করে।
একটা বিষয় খুব ভাল ভাবে বুঝে নিতে হবে যে, নামাযী শুধুমাত্র ঐ ব্যক্তিকেই বলা যায় যে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত কায়েম করে। আমাদের দেশে অজ্ঞ মুসলিমরা নিজেদেরকে নামাযী ভাবে। কেননা তাদের কেউ কেউ জুম্মা পড়া মুসলিম। কেউ কেউ ২ ঈদ পড়া মুসলিম। অথচ তারাও কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে বে-নামাযী বলেই গণ্য। তারা নিজেকে বে-নামাযী মনে করে না বরং নামাযী-ই মনে করে – এটি আসলে তাদের অজ্ঞতা।
আমাদের দেশে বে-নামাযীদের একটি বড় অজুহাত হচ্ছে- তাদেরকে সালাতের কথা বললেই তাদের কাপড় খারাপ থাকে। বে-নামাযীদের যত কাপড় খারাপ থাকে কোন নারীরও মনে হয় এত শরীর নাপাক থাকে না।
এখন যে শুধুমাত্র জুম্মা পড়া মুসুল্লি তার হিসাবটা লক্ষ্য করুন-
সে শুধু সপ্তাহে এক ওয়াক্ত সালাত আদায় করে। অথচ এক সপ্তাহে তার উপর সালাত ফরজ থাকে ৩৫ ওয়াক্ত। তারমধ্যে সে ৩৪ ওয়াক্ত-ই তরক করে। ৩৪ ওয়াক্ত সালাত তরক করার পরেও সে কিভাবে নিজেকে নামাযী মুসলিম ভাবে???
এবার আসুন দেখি ইসলামে বে-নামাযীর বিধান কিঃ
সালাত আদায় করা এত গুরুত্বপূর্ণ যে, সালাত আদায় না করলে মুসলিম থাকা যায় না।
ইচ্ছাকৃত ভাবে সালাত ত্যাগ করলে সে আর মুসলিম থাকবে না-
জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ্র বান্দা ও শিরক-কুফরের মধ্যে পার্থক্যকারী হচ্ছে সালাত ত্যাগ করা।
[সহিহ মুসলিম, ১ম খন্ড, ঈমান অধ্যায়, হাদিস নং-১৫৪]
সালাত আদায় করা এত গুরুত্বপূর্ণ যে, সালাত আদায় না করলে মুসলিম থাকা যায় না।
ইচ্ছাকৃত ভাবে সালাত ত্যাগ করলে সে আর মুসলিম থাকবে না-
জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ্র বান্দা ও শিরক-কুফরের মধ্যে পার্থক্যকারী হচ্ছে সালাত ত্যাগ করা।
[সহিহ মুসলিম, ১ম খন্ড, ঈমান অধ্যায়, হাদিস নং-১৫৪]
আল্লাহ্র রাসুল (সাঃ) আরো বলেছেন- আমাদের ও কাফেরদের মাঝে চুক্তি হল সালাত। সুতরাং যে ব্যক্তি তা ত্যাগ করবে সে কাফির হয়ে যাবে।
(তিরমিজিঃ ২৬২১, ইবনে মাজাহঃ ১০৭৯)
(তিরমিজিঃ ২৬২১, ইবনে মাজাহঃ ১০৭৯)
অর্থাৎ বে-নামাজী কাফের। নিঃসন্দেহে কাফের।
যে ৫ ওয়াক্ত সালাত কায়েম করে না সে মুসলিম নয়, সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছে।
যে ৫ ওয়াক্ত সালাত কায়েম করে না সে মুসলিম নয়, সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছে।
যদি যদি কাউকে মুসলিম থাকতে হয় তবে তাকে প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত সালাতের ফরজ ১৭ রাকআত আদায় করতেই হবে। নইলে সে কাফের।
এই তো গেল হাদিস। আসুন এইবার দেখি কুরআন কি বলে-
মহান আল্লাহ্ বলেন-“সবাই তাঁর অভিমুখী হও এবং ভয় কর, সালাত কায়েম কর এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। (সুরা আর রুমঃ ৩১)
মহান আল্লাহ্ বলেন-“সবাই তাঁর অভিমুখী হও এবং ভয় কর, সালাত কায়েম কর এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। (সুরা আর রুমঃ ৩১)
এই আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন- সালাত কায়েম করতে এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত না হতে। তাহলে যে ব্যক্তি সালাত কায়েম করল না সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হবে। কেননা সালাত হচ্ছে আল্লাহ্র হুকুম। আল্লাহ্র আনুগত্য করা ফরজ।
সে সালাত আদায় না শয়তানের আনুগত্য করল। তাই বে-নামাযী হচ্ছে মুশরিক।
মুসলিমের Identity হচ্ছে সালাত। আপনি কি জানেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর যুগে যারা মন থেকে ইসলামকে মেনে নেয় নি কিন্তু মুখে মুখে কালেমার সাক্ষ্য দিয়েছিল অর্থাৎ যারা মুনাফিক ছিল তারাও রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পিছনে জামাআতে সালাত আদায় করতে বাধ্য ছিল? রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর যুগে একটাও বেনামাযী খুঁজে পাওয়া যেত না।
-কেন?কারন তারা যদি কালেমার সাক্ষ্য দেয়ার পরেও সালাত আদায় না করে তবে তারা যে আসলে মুসলিম নয় এটা ধরা পরে যাবে। মুনাফিক হওয়া সত্ত্বেও তারা সালাত আদায় করতে বাধ্য ছিল।
মহান আল্লাহ্ বিশ্বাসীদের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন- যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে। (সুরা বাকারাঃ ৩)
তাহলে দেখতে পারছেন, ঈমান আনার পর পর-ই তার এক নম্বর ফরজ কাজ হচ্ছে সালাত কায়েম করা।
তাহলে দেখতে পারছেন, ঈমান আনার পর পর-ই তার এক নম্বর ফরজ কাজ হচ্ছে সালাত কায়েম করা।
আল্লাহ্র রাসুল (সাঃ) আরো বলেছেন- আমাদের ও কাফেরদের মাঝে চুক্তি হল সালাত। সুতরাং যে ব্যক্তি তা ত্যাগ করবে সে কাফির হয়ে যাবে।
(তিরমিজিঃ ২৬২১, ইবনে মাজাহঃ ১০৭৯)
(তিরমিজিঃ ২৬২১, ইবনে মাজাহঃ ১০৭৯)
সুরা আত তওবা-তে মহান আল্লাহ্ মুশরিকদের সীমালঙ্ঘন করার পর মাফ পাওয়ার ব্যাপারে বলেন-“অবশ্য তারা যদি তওবা করে, সালাত কায়েম করে আর যাকাত আদায় করে, তবে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই। আর আমি বিধানসমূহে জ্ঞানী লোকদের জন্যে সর্বস্তরে র্বণনা করে থাকি। (সুরা আত তওবাঃ ১১)
তাহলে কোন লোক সত্যিকার অর্থে ঈমান এনেছে কি না, তার অন্তরে প্রবেশ করে দেখার ক্ষমতা আমাদের নেই। তাহলে আমরা কিভাবে বুঝবো যে, এই লোকটি ঈমান এনেছে??
তাই সালাত-ই হচ্ছে তার পরিচায়ক, তার Identity. আল্লাহ্ এই আয়াতে একথাই বলছেন, যদি তারা সালাত কায়েম করে আর যাকাত আদায় করে, তবে তারা আমাদের দ্বীনী ভাই। যদি আমরা তাকে সালাত কায়েম করতে দেখি তবেই তাকে মুসলিম বলে- সাক্ষ্য দিব। নচেৎ নয়।
তাই ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতেই হবে, এর বিকল্প কোন পথ নেই। যদি মুসলিম থাকতে হয় তবে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতেই হবে। যদি কাপড় খারাপও থাকে এবং অন্য কোন উপায় না-ও সেক্ষেত্রেও ঐ নাপাক কাপড় দিয়েই সালাত আদায় করতে। পরে আল্লাহ্ এটা বিবেচনা করবেন। যেহেতু ঐ মুহূর্তে তার জন্য পবিত্র কাপড় দিয়ে সালাত আদায় করা সম্ভব ছিল না।
যে কোন অবস্থায়, যে কোন স্থানে সালাতের সময় হবে সেখানেই সালাত আদায় করতে হবে।
“জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণীত, তিনি বলেন, রাসুল (ﷺ) বলেছেন- সমস্ত জমিন আমার জন্য সালাত আদায়ের স্থান এবং পবিত্রতা অর্জনের উপায় করা হয়েছে। কাজেই আমার উম্মতের যে কেউ যেখানেই সালাতের ওয়াক্ত হয় সেখানেই যেন সালাত আদায় করে নেয়। [সহীহ বুখারী ১ম খন্ড, সালাত অধ্যায়, হাদিস নং- ৪২৫]
“জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণীত, তিনি বলেন, রাসুল (ﷺ) বলেছেন- সমস্ত জমিন আমার জন্য সালাত আদায়ের স্থান এবং পবিত্রতা অর্জনের উপায় করা হয়েছে। কাজেই আমার উম্মতের যে কেউ যেখানেই সালাতের ওয়াক্ত হয় সেখানেই যেন সালাত আদায় করে নেয়। [সহীহ বুখারী ১ম খন্ড, সালাত অধ্যায়, হাদিস নং- ৪২৫]
এখন তো মসজিদের অভাব নেই।
মন থেকে ৫ ওয়াক্ত সালাতকে আপন করে নিতে হবে। তবেই তার পরিচয় হবে- মুসলিম।
এখনো কোন বে-নামাযীর যদি মুসলিম থাকতে চায় তবে তাকে অতি সত্বর আল্লাহ্র কাছে তাওবা করে ৫ ওয়াক্ত সালাতকে আঁকড়ে ধরতে হবে। যদি সে ৫ ওয়াক্ত সালাত কায়েমকারী হতে হবে তবেই সে মুসলিমদের দ্বীনীভাই নইলে সে কাফের।
এবার আসি, যারা ২ ওয়াক্ত পড়ে ৩ ওয়াক্ত পড়ে না বা ৪ ওয়াক্ত পড়ে ১ ওয়াক্ত পড়ে না, ফজর পড়ে না, বা শুধু জুম্মা পড়া মুসুল্লি, বা শ্বশুর বাড়িতে গেলে লোক-লজ্জা কারনে পড়ে, বা অফিসে বসকে দেখানর জন্য পড়ে ইত্যাদি এদের বিধান কি?
–ইসলামে এরাও বেনামাজী হিসাবে গণ্য। এবং এরা হচ্ছে মুনাফিক। মুনাফিকরা যেমন চাপে পরে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পিছনে জামাআতে সালাত আদায় করতে বাধ্য ছিল এদের ব্যাপারটিও তাই।
কারন মুনাফিকরা সুযোগ পেলেই সালাত ফাঁকি দিত। কেননা তারা তো শুধু বাধ্য হওয়ার কারনে সালাত আদায় করত না। সালাত হচ্ছে আল্লাহ্র হক যে ব্যক্তি মুমিন-মুসলিম সে খুশি মনে আল্লাহ্কে তাঁর হক দিবে আর মুনাফিক ব্যক্তি আল্লাহ্র হকের পরোয়া করে না। সে আল্লাহ্র হক যথেচ্ছা নষ্ট করে।
তাই মুনাফিকরা সুযোগ পেলেই সালাত ফাঁকি দিত। একারনেই তারা ফজর ও ইশার সালাতে হাজির হত না, কারন ঐ সময় অন্ধকার থাকত ফলে কেউ অতটা বুঝতে পারবে না যে, কে এসেছে আর কে কে আসেনি।
কারন মুনাফিকরা সুযোগ পেলেই সালাত ফাঁকি দিত। কেননা তারা তো শুধু বাধ্য হওয়ার কারনে সালাত আদায় করত না। সালাত হচ্ছে আল্লাহ্র হক যে ব্যক্তি মুমিন-মুসলিম সে খুশি মনে আল্লাহ্কে তাঁর হক দিবে আর মুনাফিক ব্যক্তি আল্লাহ্র হকের পরোয়া করে না। সে আল্লাহ্র হক যথেচ্ছা নষ্ট করে।
তাই মুনাফিকরা সুযোগ পেলেই সালাত ফাঁকি দিত। একারনেই তারা ফজর ও ইশার সালাতে হাজির হত না, কারন ঐ সময় অন্ধকার থাকত ফলে কেউ অতটা বুঝতে পারবে না যে, কে এসেছে আর কে কে আসেনি।
এজন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুনাফিকদের উপস ফজর ও ইশার সালাতের চাইতে অধিক ভারী সালাত আর নেই। এ দু’ সালাতের কি ফযিলত, তা যদি তারা জানত, তা হলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা (জামা’আতে) উপস্থিত হতো। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি খুব ইচ্ছা করছিলাম যে, মুয়াজ্জ্বীন কে ইকামত দিতে বলি এবং কাউকে লোকদের ইমামতি করতে বলি, আর আমি নিজে একটি আগুনের মশাল নিয়ে গিয়ে এরপরও যারা সালাতে আসেনি, তাদের উপর আগুন ধরিয়ে দেই। (সহিহ বুখারী, ২য় খন্ড, সালাতের ওয়াক্ত সমুহ অধ্যায়, হাদিস নং ৬২৪)
তাই মুনাফিকরাই হচ্ছে সুযোগ সন্ধানী। তারা কিছু ওয়াক্ত পড়ে কিছু বাদ দেয়। আর মুনাফিক মূলত কাফের-ই, সে বাহ্যিক দিক থেকে মুসলিম বা নামাজী সেজে থাকে।
অতএব যারা কিছু ওয়াক্ত পড়ে কিছু ওয়াক্ত পড়ে না তারাও বে-নামাযী বলেই গণ্য এবং এরাও কাফের। এবং এদের এই ভন্ডামি ও কপটতার কারনে আল্লাহ্র এদেরকে কাফেরের চেয়ে কঠিন শাস্তি দিবেন।
মহান আল্লাহ্ বলেন-“নিঃসন্দেহে মুনাফেকদের স্থান জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে। আর তোমরা তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী কখনও পাবে না। (সুরা আন নিসাঃ ১৪৫)
একবার একজন আমাকে প্রশ্ন করেছিলঃ বেনামাজি-কে বিয়ে করার বিধান এর ব্যাপারে-
এই জীবনসঙ্গী/সঙ্গিনী চয়ন করার ক্ষেত্রে এই ভুল অনেকের মাঝেই দেখা যাচ্ছে সঠিক বিধান না জানা থাকার কারনে।
যেহেতু এই বিষয়টি খুব-ই গুরুত্বপূর্ণ তাই এই বিষয়টি সম্পর্কে সকলের জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
যেহেতু এই বিষয়টি খুব-ই গুরুত্বপূর্ণ তাই এই বিষয়টি সম্পর্কে সকলের জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
বেনামাজীর বিধান সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই অবগত হয়েছি যে, বে-নামাজী মুসলিম নয় বরং কাফের এবং মুশরিক দুটোই।
আর মুশরিকদের বিয়ের ব্যাপারেমহান আল্লাহ্ বলেন-
“আর তোমরা মুশরিক নারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরিক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদের রূপ-সৌন্দর্য্য তোমাদেরকে মুগ্ধ করে। এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরিকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা জাহান্নামের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। (সুরা বাকারাঃ ২২১)
তাহলে বুঝা গেল- বেনামাজীকে বিবাহ করা হারাম।
“আর তোমরা মুশরিক নারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরিক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদের রূপ-সৌন্দর্য্য তোমাদেরকে মুগ্ধ করে। এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরিকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা জাহান্নামের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। (সুরা বাকারাঃ ২২১)
তাহলে বুঝা গেল- বেনামাজীকে বিবাহ করা হারাম।
সালাত ত্যাগ এত বড় পাপ যে, একজন খুনিও তার তুলনায় ছোট পাপী। একজন ব্যাভিচারকারি, একজন সন্ত্রাসী, একজন চোর, একজন মদখোরের চাইতেও একজন বেনামাজী অনেক—অনেক বড় পাপী।
আমাদের দেশে হয়তো কেউ তার মেয়েকে কোন মদখোরের সাথে বিয়ে দিবে না, কোন সন্ত্রাসীর সাথে বিয়ে দিবে না, কোন ব্যাভিচারকারির সাথে বিয়ে দিবে না, কিন্তু বেনামাজীর সাথে ঠিক-ই বিয়ে দিয়ে দেয়। এটি অজ্ঞতা। চরম পর্যায়ের ভুল এবং এটি একটি মারাত্মক অপরাধ।
তাই সকলের উচিৎ অবশ্যই একটা নামাজী পাত্র/পাত্রী দেখে বিবাহ করা। অভিভাবকরা অনেক সময় নিজের কন্যাকে কোন বেনামাজি ছেলের কাছে শুধু মাত্র ঐ ছেলের টাকা লোভেই বিয়ে দিয়ে দেয়। এটি মোটেও উচিৎ নয়। এর দ্বারা সে শুধু তার কন্যাকে জাহান্নামের দিকেই ঠেলে দিল। আল্লাহ্ সকলকে সঠিক জ্ঞান দান করুন। আমীন।।
আল্লাহ্র রাসুল (সাঃ) বলেন- কিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম হিসাব নেয়া হবে সালাতের। যার সালাতের হিসাব ঠিকমত পাওয়া যাবে সে সকল বিষয়েই কৃতকার্য হবে। আর যার সালাতের হিসাব ঠিকমত পাওয়া যাবে না সে ব্যর্থ হবে। (তিরমিজী)
তাহলে সালাত এতগুরুত্বপূর্ণ যে, সালাত আল্লাহ্কে ঠিক মত বুঝিয়ে দিতে না পারলে পরিনাম খারাপ। তখন আগুন ছাড়া কিছুই জুটবে না।
মহান আল্লাহ্ বলেন-“আর সে দিনের ভয় কর, যখন কেউ কারও সামান্য উপকারে আসবে না এবং তার পক্ষে কোন সুপারিশও কবুল হবে না; কারও কাছ থেকে ক্ষতিপূরণও নেয়া হবে না এবং তারা কোন রকম সাহায্যও পাবে না। (সুরা বাকারাঃ ৪৮)
এতটা কঠিন হুশিয়ারি থাকার পরেও যে ব্যক্তি যে ব্যক্তি সালাত আদায় না করে আল্লাহ্র হক নষ্ট করে, সে যে আপনার হক নষ্ট করবে না তার কি নিশ্চয়তা আছে? সে যে আপনার সাথে খিয়ানত করবে না তার কি গ্যারান্টি আছে?
সালাত হচ্ছে আল্লাহ্র হক। কোন ব্যক্তি কিভাবে আল্লাহ্র হক নষ্ট করতে পারে??
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা বলেন-
“আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, এভাবে যে, তাকে পরীক্ষা করব অতঃপর তাকে করে দিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হয়, না হয় অকৃতজ্ঞ হয়”। (সূরা ইনসান ২-৩)
“আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, এভাবে যে, তাকে পরীক্ষা করব অতঃপর তাকে করে দিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হয়, না হয় অকৃতজ্ঞ হয়”। (সূরা ইনসান ২-৩)
তিনি আরও বলেন-
“নিশ্চয় আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদেরকে অনেক সৃষ্ট বস্তুর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। (সুরা বানী ইসরাইলঃ ৭০)
“নিশ্চয় আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদেরকে অনেক সৃষ্ট বস্তুর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। (সুরা বানী ইসরাইলঃ ৭০)
“হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর, যিনি তোমাদিগকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদিগকে সৃষ্টি করেছেন। তাতে আশা করা যায়, তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পারবে। যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসাবে। অতএব, আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাকেও সমকক্ষ করো না। বস্তুতঃ এসব তোমরা জান”।
(সূরা, বাকারাঃ ২১-২২)
মহান আল্লাহ্ বলেন-“ তোমরা যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, তবে গুনে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সুরা নাহলঃ ১৮)
(সূরা, বাকারাঃ ২১-২২)
মহান আল্লাহ্ বলেন-“ তোমরা যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, তবে গুনে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সুরা নাহলঃ ১৮)
মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে জীবন ধারনের জন্য সব কিছু দিয়েছেন।
আমাদের সমস্ত প্রয়োজন পুরা করার পর আমাদেরও আমাদের রবের প্রতি কিছু দায়িত্ব আছে।
সালাত হচ্ছে আল্লাহ্র হক। কোন অবস্থাতেই কেউ আল্লাহ্র হক নষ্ট করতে পারে না।
এরপরেও যে আল্লাহ্র হক নষ্ট করে সে চরম অকৃতজ্ঞ।
আমাদের সমস্ত প্রয়োজন পুরা করার পর আমাদেরও আমাদের রবের প্রতি কিছু দায়িত্ব আছে।
সালাত হচ্ছে আল্লাহ্র হক। কোন অবস্থাতেই কেউ আল্লাহ্র হক নষ্ট করতে পারে না।
এরপরেও যে আল্লাহ্র হক নষ্ট করে সে চরম অকৃতজ্ঞ।
যে আল্লাহ্ সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান, যে আল্লাহ্ মৃতকে জীবিত করতে সক্ষম, যে আল্লাহ্ পচে-গলে মাটির সাথে মিশে যাওয়া দেহকে পুনর্গঠন করতে সক্ষম, কঠিন শাস্তি দিতে সক্ষম, যে আল্লাহ্কে ফাঁকি দিয়ে কোনভাবেই পলায়ন করা সম্ভব না। সেই আল্লাহ্র সাথেই যে ধোঁকাবাজী করে, আল্লাহ্র হক বিনষ্ট করে, সে আপনার সাথে খিয়ানত যেকোন মুহূর্তেই করতে পারে।
তাই আসুন আমরা ৫ ওয়াক্ত সালাত কায়েমকারী হয়ে যাই। আল্লাহ্র হক যথাযথ ভাবে আদায়ে সচেষ্ট হই। আল্লাহ্র কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।
মহান আল্লাহ্ বলেনঃ”যদি কৃতজ্ঞ হও তবে নিয়ামত আরো বাড়িয়ে দিব। (সুরা ইব্রাহীমঃ ৭)
মহান আল্লাহ্ আরো বলেন-“যখন পৃথিবী চুর্ণ-বিচুর্ণ হবে এবং আপনার পালনকর্তা ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে উপস্থিত হবেন, এবং সেদিন জাহান্নামকে আনা হবে, সেদিন মানুষ উপলব্ধি করবে, কিন্তু তখন তার এই উপলব্ধি কি কাজে আসবে? সে বলবেঃ হায়, এ জীবনের জন্যে আমি যদি কিছু অগ্রে প্রেরণ করতাম! সেদিন তার শাস্তির মত শাস্তি কেউ দিবে না। এবং তার বন্ধনের মত বন্ধন কেউ দিবে না।
অতএব হে প্রশান্ত আত্মা, তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট ফিরে যাও সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে। অতঃপর আমার কৃতজ্ঞ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর। (সুরা ফাজরঃ ২১-৩০)
অতএব হে প্রশান্ত আত্মা, তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট ফিরে যাও সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে। অতঃপর আমার কৃতজ্ঞ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর। (সুরা ফাজরঃ ২১-৩০)
আল্লাহ্ আমাদেরকে তাঁর কৃতজ্ঞ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার তৌফিক দিন এবং তাঁর জান্নাতে প্রবেশ করান।
No comments:
Post a Comment