
*প্রশ্ন: যঈফ/দুর্বল কাকে বলে এবং দুর্বল হাদীস কি আমলযোগ্য?*
যঈফ অর্থ দুর্বল। যে হাদীসের মধ্যে সহীহ হাদীসের শর্তাবলী থেকে এক বা একাধিক শর্তের ঘাটতি রয়েছে সেটিকে যঈফ হাদীস বলা হয়। যেমন সনদ বা বর্ণনাসূত্রের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা, বর্ণনাকারী عدل ন্যায়পরায়নতা, দ্বীনদারী, তাকওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া, অথবা এটা প্রামাণিত হওয়া যে, বর্ণনকারী হাদীস যথার্থভাবে সংরক্ষণ করতে ব্যার্থ হয়েছে- তা স্মৃতি বিভ্রাটের কারণে হোক বা তার কাছে সংরক্ষিত হাদীসের কিতাবগুলো কোন কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে হোক।
এটি অত্যন্ত সুক্ষ্ম বিষয়। তাই হাদীস শাস্ত্রের বিদগ্ধ মুহাদ্দিসগণ সার্বিক দিক চুলচেরা বিশ্লেষণ করে কোনও হাদীস সহীহ না কি যঈফ সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন।
এটি অত্যন্ত সুক্ষ্ম বিষয়। তাই হাদীস শাস্ত্রের বিদগ্ধ মুহাদ্দিসগণ সার্বিক দিক চুলচেরা বিশ্লেষণ করে কোনও হাদীস সহীহ না কি যঈফ সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন।

দুর্বল হাদীস সাধারণভাবে অগ্রহনযোগ্য। তবে কিছু মুহাদ্দিস কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে দুর্বল হাদীসের উপর আমল করার বৈধতার পক্ষে মত দিয়েছেেন। যেমন:
– যদি হাদীসটি অতিরিক্ত দূর্বল না হয়
– বা শরীয়তের মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক না হয়
– বা হালাল-হারাম সংক্রান্ত না হয় তাহলে দুর্বল হাদীসের প্রতি আমল করা জায়েয রয়েছে। অন্যথায় জায়েয হবে না।
ইমাম মুসলিম, ইমাম আলবানী সহ আরও বহু আলেম কোন ধরণের যঈফ হাদীসের প্রতি আমল না করার পক্ষে মত দিয়েছেন। এটিই অধিক অগ্রাধিকারযোগ্য মত ইনশাআল্লাহ।
অপরপক্ষে একদল মুহাদ্দিস পূর্বোক্ত শর্তাবলী সাপেক্ষে ফযীলতের ক্ষেত্রে দুর্বল হাদীসের উপর আমল করার বৈধতার পক্ষে মত দিয়েছেন। এদের মতে ফযীলতের ক্ষেত্রে দুর্বল হাদীস আমলযোগ্য। যেহেতু তা ইসলামের হালাল-হারাম ইত্যাদি বিধিবিধান সংক্রান্ত নয়।
– যদি হাদীসটি অতিরিক্ত দূর্বল না হয়
– বা শরীয়তের মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক না হয়
– বা হালাল-হারাম সংক্রান্ত না হয় তাহলে দুর্বল হাদীসের প্রতি আমল করা জায়েয রয়েছে। অন্যথায় জায়েয হবে না।
ইমাম মুসলিম, ইমাম আলবানী সহ আরও বহু আলেম কোন ধরণের যঈফ হাদীসের প্রতি আমল না করার পক্ষে মত দিয়েছেন। এটিই অধিক অগ্রাধিকারযোগ্য মত ইনশাআল্লাহ।
অপরপক্ষে একদল মুহাদ্দিস পূর্বোক্ত শর্তাবলী সাপেক্ষে ফযীলতের ক্ষেত্রে দুর্বল হাদীসের উপর আমল করার বৈধতার পক্ষে মত দিয়েছেন। এদের মতে ফযীলতের ক্ষেত্রে দুর্বল হাদীস আমলযোগ্য। যেহেতু তা ইসলামের হালাল-হারাম ইত্যাদি বিধিবিধান সংক্রান্ত নয়।
কিন্তু প্রথম মতটি অধিক অগ্রাধিকারযোগ্য। অর্থাৎ যঈফ হাদীস কখনোই আমলযোগ্য নয়। চাই তা হালাল-হারাম সংক্রান্ত হোক অথবা ফযীলত সংক্রান্ত হোক। কেননা, উক্ত দুর্বল হাদীসটি প্রকৃতপক্ষে রাসুল সা. থেকে অনুমদিত কি না সেটাই সন্দেহপূর্ণ। সুতরাং বিশুদ্ধ সূত্রে সুসাব্যস্ত হাদীস (সহীহ বা হাসান হাদীস) ছাড়া সন্দেহপূর্ণ যঈফ হাদীস আমলযোগ্য হতে পারে না।
প্রকৃতপক্ষে আমলের ফযীলতে যত সহীহ হাদীস বিদ্যামান রয়েছে একজন মুসলিম যদি সারা জীবন সেগুলোর প্রতি আমল করে তারপরও তা শেষ করতে পারবে না। তাহলে যঈফ বা দুর্বল হাদীসের দিকে যাওয়ার প্রয়োজন কি?
আল্লাহু আলাম।
আল্লাহু আলাম।





উত্তরপ্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল (মাদানী)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব
https://www.facebook.com/AbdullaahilHadi
No comments:
Post a Comment